ওয়ারেন, ৪ জুলাই : আজ বৃহস্পতিবার ৪ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৯তম স্বাধীনতা দিবস। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর একটি এই দিবস, যা শুধু সরকারি ছুটি নয়, একটি জাতির আত্মপরিচয়, দেশপ্রেম এবং গণতন্ত্রের মূল চেতনার প্রতীক।
১৭৭৬ সালের ২ জুলাই, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীন হওয়ার পক্ষে ভোট দেয় দ্বিতীয় কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস। এরপর ৪ জুলাই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়। যদিও চূড়ান্ত স্বাক্ষর হয় ২ আগস্ট, তবু ৪ জুলাইই হয়ে ওঠে আমেরিকার ‘জন্মদিন’।
এই দিনটি স্মরণে প্রতি বছর আমেরিকা জুড়ে আয়োজন করা হয় জাঁকজমকপূর্ণ প্যারেড, আতশবাজি, কনসার্ট, দেশপ্রেমমূলক বক্তৃতা এবং পারিবারিক ও সামাজিক মিলনমেলার।
প্রতিবারের মতো এবারও স্বাধীনতা দিবসে বর্ণিল আলোয় সেজেছে নিউইয়র্কের স্ট্যাচু অব লিবার্টি। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের এই প্রতীক যেন এদিন আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। হাজার হাজার মানুষ এই স্মারক দর্শনে ভিড় করেন।
এই ঐতিহাসিক দিবসে দক্ষিণ মিশিগানজুড়ে সুর আর ছন্দের ছড়াছড়ি—১৮ শতকের সামরিক পোশাকে সুসজ্জিত প্লাইমাউথ ফাইফ অ্যান্ড ড্রাম কর্পস দলটি আজও ইতিহাসের আবহ বয়ে নিয়ে চলেছে। বাঁশির তীক্ষ্ণ সুর, স্নেয়ার ড্রামের গর্জন আর পদচারণার দৃঢ়তা যেন ১৭৭৬-এর বিপ্লবী চেতনাকে আবারও উস্কে দেয়।
দলটি আজ অংশ নেবে প্লাইমাউথের Good Morning USA Parade-এ। আগামী দুই দিন তারা অংশ নেবে Cass City Freedom Festival এবং Algonac Lions Parade-এ। কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে গঠিত এই দলটি সারা গ্রীষ্ম জুড়ে মিশিগানজুড়ে প্রায় ৩০টির মতো ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মার্কিনিরা প্রতিবছর আতশবাজি, প্যারেড, খাবার, পোশাক এবং ভ্রমণে ৬ বিলিয়নেরও বেশি ডলার ব্যয় করেন। আতশবাজি প্রদর্শনই গড়ে ১ বিলিয়নের বেশি বাজার তৈরি করে।
২৪৮ বছর আগে একদল উপনিবেশবাসীর সাহসিকতা ও দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল একটি নতুন রাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র। আজকের দিনে এসে সেই গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমেরিকাবাসীরা আবারও নিজেদের ঐতিহ্যে ফিরে যায়—একটি পতাকার ছায়ায়, একটি স্বপ্নের আলোয়। “আমেরিকার পতাকা শুধু কাপড় নয়, এটা একটা আদর্শ- স্বাধীনতার, সাহসের, আর সংহতির।” এমনই বার্তা নিয়ে উদযাপিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৯তম স্বাধীনতা দিবস।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে উৎসবের আমেজ
এই দিন শুধু আমেরিকানদেরই নয়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। মিশিগান, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভানিয়া, ম্যারিল্যান্ড, বস্টন, মায়ামি, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, টেক্সাসসহ প্রায় সব শহরেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ দিনটিকে নানা আয়োজনে উদযাপন করবেন। যেখানে থাকবে উৎসব, মিলনমেলা ও সংস্কৃতির প্রাণবন্ত ছোঁয়া।
বিভিন্ন বাংলাদেশি সংগঠনের এসব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে বারবিকিউ পার্টি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা বিনোদনমূলক কর্মসূচি। সেই সাথে পারিবারিক প্রোগ্রামও রয়েছে।প্রবাসীরা এ দিনটিকে শুধুমাত্র আমেরিকার স্বাধীনতা নয়, বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির উৎসব হিসেবেও পালন করবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan